Sunday, July 31, 2016

৫ম বর্ষ ৩৭তম সংখ্যা ।। ১লা অগস্ট ২০১৬

এই সংখ্যায় ২৫টি কবিতা । লেখকসূচি – মধুছন্দা মিত্র ঘোষ, সুবীর সরকার, অনুপম দাশশর্মা, শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, সতীশ বিশ্বাস, বচন নকরেক, রেজওয়ান তানিম, মতিন বৈরাগী, মিজান ভুইয়া, আলপনা মিত্র, বনানী ভট্টাচার্য, স্বাতী বিশ্বাস,  মমতা দাস (ভট্টাচার্য), রাফসান জানি, আফরোজা অদিতি, আয়েত হসেন উজ্বল, শান্তিময় কর, শিবশঙ্কর গুপ্ত, তন্ময় চক্রবর্তী, মামুদ নজির, সুদীপ দাস, রাজর্ষী দে, বিবেকানন্দ দাস, মোঃ ওবেদুল হক, জাকিয়া এস আরা ।

সব কবিতা পড়ুন । প্রথম পৃষ্ঠায় ১০টি ও পরের পৃষ্ঠায় ১৫টি কবিতা আছে ।

সম্পাদকীয়



অন্যনিষাদের নিয়মিত পাঠকরা নিশ্চিতভাবেই কিছুটা অবাক হবেন পত্রিকার এই প্রচ্ছদ দেখে । কেন এমন হল, সেটা বলি ।

দিন তিনেক হল কম্পিউটারের সব ব্রাউসার থেকে আমার গুগল একাউন্ট, যা থেকে ‘অন্যনিষাদ’গল্পগুচ্ছ ব্লগ প্রকাশিত হয়, উধাও হয়ে গেছে । ক্রোম ব্রাউসার থেকে উধাও হয়েছে মাস দুএক আগেই । কিন্তু মজিলা তে একাউন্টটা ছিল । ফলে পত্রিকার প্রকাশও বজায় ছিল । এখন সব কটি ব্রাউসার থেকেই আমার গুগল একাউন্ট উধাও । ফলে পত্রিকার ড্যাসবোর্ডে যেতে পারছি না । অনেকে বলছেন একাউন্টটা হ্যাক হয়েছে । জানি না একাউন্ট হ্যাক করে পত্রিকা প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করে কার কি লাভ !
অতয়েব একটা বিকল্প ব্যবস্থা করতে হল । অন্যনিষাদ’এর নিজস্ব গুগল একাউন্ট আছে । সেখান থেকে একটা ব্লগ ওপেন করে সাদামাটা চেহারায় ‘অন্যনিষাদ’ প্রকাশ করে একটা বিকল্প ব্যবস্থা করতে হল । চেষ্টা চালাচ্ছি, একাউন্টটা ফিরে পেলেই ‘অন্যনিষাদ’ আবার তার পুরাতন পরিচিত চেহারায় ফিরে যাবে । যতদিন না ফিরে পাচ্ছি  ততদিন অন্যনিষাদ পাবেন এই নতুন লিঙ্কে http://anyonishadgalpo.blogspot.in/

  ২৫ জুলাই ৫ম বর্ষ ৩৬তম সংখ্যা পর্যন্ত সব সংখ্যাই পাবেন যথারীতি পুরাতন লিঙ্কে http://anyanishad.blogspot.in/

২২শে শ্রাবণ/৭ই অগস্টের ‘কবিপ্রণাম’ সংখ্যাও এভাবেই প্রকাশিত হবে । ইতিমধ্যে একাউন্টটা ফেরত পাই তো ভালো না হলে এই বিকল্প ব্যবস্থাই চলবে । সে ক্ষেত্রে ব্লগ ডিজাইন পরিবর্তন ও অঙ্গসজ্জার জন্য হয়তো একটি বা দুটি সংখ্যার প্রকাশ বন্ধ থাকবে । নিখরচার পত্রিকা, এই উৎপাৎ  মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কি !

অনুরোধ, যারা এই মেল আইডিতে লেখা পাঠিয়ে থাকেন তাঁরা দয়া করে অন্য মেইল আইডি অর্থাৎ anyonishadgalpo@gmail.com এই আইডিতে লেখা পাঠাবেন ।

অন্যনিষাদের পাঠকমন্ডলী বিপুল । প্রযুক্তির অনভিপ্রেত উৎপাৎ জনিত অসুবিধা তাঁরা নিশ্চিতভাবেই অনুধাবন করেছেন । সকলকে শুভেচ্ছা ।


মধুছন্দা মিত্র ঘোষ

প্রকৃত প্রস্তাব
          
রাতের দেহ থেকে ফুটে উঠলো
কবিতাকথা, কিছু বা রূপকথা 
চুঁইয়ে এলো কাকজ্যোৎস্না
অদ্ভুত রম্যতায় চাঁদ শুষে নিল
রাতের বাচালতা
অন্যমনস্ক কিছু চাঁদের বাহার 
আমার বিষাদ, আমার কান্না 
বিলিয়ে দিল মন্দভালো আখ্যান
এই উপস্হিতি,এই আয়োজন,
আঁধার ছুঁয়ে ছিলো শ্রাবণ 
আশ্চর্য আতিশয্যে কীভাবে কখন 
সাজিয়ে রাখলো প্রকৃত প্রস্তাব
অনুচ্চার পড়ে থাকে কিছু পুনশ্চ 
কিছু ঝরে যাওয়া কবিতার পৃষ্ঠা

সুবীর সরকার

পরিখা

পরিখা খনন আদতে চিরপ্রচলিত
কত না হাহুতাস,দূরত্ব বজায়
থাকে
আর গ্যালারিতে বিপনণ।
দুরন্ত বাঘের ডাক,বাঘিনীরা দূরে
থাকেছানাদের জন্য খাবার আনছে
পাখিরা
ইনবক্সে সবুজ বাতি
প্রয়োজনে দীর্ঘায়ু হবো!
বাড়ির পথে সুপুরির খোল
স্বীকৃতি চাই না,মাঠে মাঠে

ফুটবল

অনুপম দাশশর্মা

এখন বৃষ্টি

এখন অনেক বৃষ্টি, ধুয়ে গেছে কলঙ্কের সব দাগ
নিস্তেজ গ্রামবাসীরা সার বুঝেছে
হাত জোড় করলে হরিলুঠের বাতাসা পাওয়া যায়
ঠিকঠাক সব বোঝে যাঁরা
তাঁরাই অবোধ, উৎশৃঙ্খল

এখন তো দেয়াল বেয়ে নেমে আসে সংকীর্তনের দল
ওরা বায়ুপায়ী, যেমন যেমন হাওয়ার গতি
দূর্গতি ঢেকেঢুকে ত্যামন তারাও আলোমুখী

নীরব করে দিচ্ছে শিরদাঁড়ার অন্তঃস্থল

বাকী থাকে কবিতা
সভ্যমনের শেষ উপাসনাগৃহে দ্রুত নেমে আসছে
আদিপুরুষের দলবল

হাতে তাদের বশীকরণের চেনা শৃঙ্খল

শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

আয় বৃষ্টি ঝেঁপে

বর্ষা আসব আসব করেও আসছে না
জমাটবাঁধা মেঘ বুকে নিয়ে গোমড়ামুখো আকাশ
স্বতঃস্ফূর্ত বর্ষণ নেই, শুধু
মাঝে মাঝে চোখের জলের মত
গড়িয়ে পড়া দু-এক ফোঁটা মুক্তো।

বৃষ্টি আমায় মাতাল করে
মনে নেশা ধরায়, চোখে রঙ দেয়
অনেকদিন আগে দেখা সেই মেয়েটাকে মনে পড়ে
বৃষ্টি মেখে হাততালি দিয়ে উঠেছিল।
জলখেলা ভালবাসত মেয়েটা
সারা শরীরে জল ছড়িয়ে হেসে উঠত খিলখিল করে
তার সাথে বর্ষাস্নাত হয়েছি কতবার
হাতে হাত রেখে কতবার বলেছি -
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে.......

বৃষ্টির প্রত্যেকটা ফোঁটা সে উপভোগ করত
তার অনুভূতিপ্রবণ সারা অঙ্গ দিয়ে,
এক একটা ফোঁটা এসে পড়ত
তার শরীরের এক এক অংশে
আর সে শিউরে শিউরে উঠতো, যেন
কোনো পুরুষের গোপন স্পর্শ,
যেন কেউ তৃষিত ঠোঁটে আদর করছে তাকে!
বর্ষা লাবণ্যময়ী হোতো তার বিভঙ্গে,
তার ব্রীড়াবনত তনুর সৌকর্যে
শ্রাবণ উন্মাদ হোতো বিপুল বর্ষণে
আমি দেখতাম, মাতাল হতাম, আর বলতাম -
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে........

এমন দীন বর্ষণ ভাললাগে না আমার
উন্মত্ত বর্ষণ চাই এখন
বিরামহীন, অবিশ্রান্ত, শুধু ঝরবে আর ঝরবে
ধুয়ে দেবে সমস্ত মালিন্য, সমস্ত ক্লেদ,
মেয়েটা আবার হেসে উঠবে খিলখিল করে।

সেদিনের সে, এখন পরিপূর্ণ নারী
প্রস্তুত হয়েছে নতুন সাজে
নাচবে বলে, হাততালি দেবে বলে,
এখন কি তোর কৃপণ হওয়া মানায়!!

আয় না বৃষ্টি, ঝেঁপে.........

সতীশ বিশ্বাস

অচেনা

দাঁড়িয়ে আছি
সামনে কাউন্টার
কাঁচের উপর লম্বা লাইন
মাথার পর মাথা
নড়াচড়া করছে
আমিও ওদের একজন
কোনটা আমি!
অনেকক্ষণ খুজে শেষে পেলাম।
ওই তো মাঝামাঝি জায়গায়--
মাথাটা স্থির হয়ে আছে।
আমি একটু এগোলাম-মাথাটাও একটু এগোল।
আমি আর একটু এগোলাম,মাথাটাও 
কাউন্টারের কাছে এল।   
তারপরে মাথাটা কাউন্টারে এসে
জলের বিল দিয়ে চলে গেল।
আমি তখনও লাইনে দাঁড়িয়ে!


বচন নকরেক

ভ্রষ্ট স্বপ্নের সুড়ঙে

জ্বীনে ধরা কুমারীকে
ঘিরে জটলা
প্রলাপ বন্ধে
কবিরাজি তন্ত্র-মন্ত্র,
কার্পাস তুলোয় মাখানো
পাঠা ছাগলের রক্ত
মোরগের পালক,
লাউয়ের খোলস হতে মদ
ঢেলে খাচ্ছে পুরোহিত
তার সাঙ্গপাঙ্গরা-
ভ্রষ্ট স্বপ্নের সুড়ঙে
ঢোকে, ভুলে রেখে
আসি পানপাত্র
আমি না রাজা
না কোন সম্মানী ব্যক্তি
সমাজের
তবুও হঠাৎ
ছোরা হাতে
ছুটে আসে
জ্বীনে ধরা
কুমারীটি
উপোস থাকা শরীরে
কোন রকম ছুটে
গিয়ে বুড়ো বটগাছের
আড়ালে দাঁড়াই!
ততক্ষণে ভোর
হয়ে গেছে,
পাখিরা ডাকছে;
ঘুমের ভেতর
ঘেমে ওঠা আমাকে
কে যেন
জাগিয়ে দিলো!


রেজওয়ান তানিম

রৌদ্রদিনের রাগ


জানি দেখা হবে একদিন, দূরবর্তী নদীগান যেমন উদাস করে
বলে যায় আমাদের ঘাসপুতুলের সুর, নতুন আদর চুমু মেখে
ওম খুঁজবার আরেক ফাগুন উপাখ্যান! উঁচুতে উঠলে শহরের
শেষে দেখা যাবে- মেঘের মিনারে ওই, পাখি ঠোঁটে প্রেম ফোঁটে!

প্রিয়ন্তিকা, ভুলে গেছ রৌদ্রদিন, ঘাসের চাঁদরে শুয়ে আনমনে
ডুবিভাসি প্রেম, সোনালি সোহাগ নিয়ে মিশে যাওয়া মাতাল মন!

কাজল ও চোখে ফেনা জাগে, জানি বালু ও জলের সঙ্গম অনিঃশেষ
দূরে চলে গেলেই যায়না ছিঁড়ে, প্রেমভাষা আনকোরা বেদনার রাগ!